Skip to main content

মৌসুমী,সমাজের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম।।


 এইচএসসিতে ভর্তি হওয়ার সর্বশেষ তারিখটাও যখন অতিক্রান্ত হয়েছে তখনও ভর্তি হয়নি মৌসুমী। ভর্তি হয়নি বললে ভুল হবে। ভর্তি হওয়ার মতো টাকা তখনো যোগাড় করতে পারেনি মৌসুমী।


 হ্যাঁ, বলছিলাম ডিকেজিএস ইউনাইটেড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ভর্তি প্রার্থী মৌসুমীর কথা। ভর্তির সময় চলে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর টাকা জোগাড় হয় তার। সেই কাহিনী আরো অবাক করার মতো। মৌসুমীকে পাত্রী হিসেবে দেখতে এসে পাত্র পক্ষ যে টাকা দিয়ে যায় তাই জমিয়ে রাখে মৌসুমী সবার অজান্তে। জমানো টাকা দিয়ে কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় মৌসুমীর। কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রবল ইচ্ছাশক্তি তাকে সফলতার পথ দেখিয়েছে। 

যখন কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়ের সাথে দেখা করেন ভর্তি বিষয়ে কথা বলতে তখন যে অনেক দেরি হয়ে গেছে এটা তার অজানা ছিলো না। কিন্ত তার আত্মবিশ্বাস ছিলো প্রবল। তার ইচ্ছাশক্তি, তার সব ঘটনা শুনার পর অধ্যক্ষ মহোদয়ের আন্তরিকতা, সুশীল সমাজের সহযোগিতা আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মৌসুমীর বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর কাড়ে। সকলের সহযোগিতয় ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির অনুমতি প্রদান করেন মৌসুমীকে। 

মোসুমী এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছে আমাদের মাঝে। কলেজগুলোতে অনলাইন ভর্তির ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় বেধে দেয়া হয়। কিন্তু সেই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করেছে মৌসুমী। ভর্তির শেষ তারিখ অতিক্রান্ত হওয়ার বেশ কিছুদিন পর মৌসুমীকে ভর্তির অনুমতি দেয় শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। মৌসুমীর এই জয়ের যাত্রায় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছিলেন ডিকেজিএস ইউনাইটেড কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়, সুশীল সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, লিগ্যাল এসিস্ট্যান্স ফর ভালনারেবল সোসাইটি, শিক্ষা বোর্ডের সম্মানিত চেয়ারম্যান মহোদয় সহ অনেকেই। 

এই বিজয়ের বিজয়ী মৌসুমী ও ডিকেজিএস ইউনাইটেড কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়কে অভিনন্দন জানাতে গত ১৮/০৪/২০২২ ইং তারিখ লিগ্যাল এসিস্ট্যান্স ফর ভালনারেবল সোসাইটি এর সভাপতি, সদস্যবৃন্দ সহ গুণীজন দাপুনিয়ার ডিকেজিএস ইউনাইটেড কলেজে উপস্থিত হন।  সাথে থাকার সুযোগ হয়েছিল আমারও।   

অভিনন্দন সংশ্লিষ্ট সবাইকে। মৌসুমীদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। প্রসারিত থাকুক মৌসুমীদের জন্য সহযোগিতার হাতগুলো। 


M A H BAQI

28-04-2022                                                                                                                                                            

Comments

Popular posts from this blog

ঈদ আমেজে, আবেগ-অনুভূতিতে নতুন মাত্রা

আমার সন্তান,  আমার নতুন পৃথিবী। ভিন্নধরনের আবেগ অন্যরকম এক অনুভূতি নিয়ে নতুনভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করাটা আমার জীবনে এই প্রথম । এমন একটা সময় ছিলো যখন ঈদের আগমনের কথা ভেবে নয়,নতুন পোশাকের আশায় ঈদের আগমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম। ৩০ টাকা দামের একটা শর্ট প্যান্ট পেলেও মনে হতো আমি পুরো পৃথিবীটাই পেয়ে গেছি। সেই সময়টা আজ কেবলই স্মৃতি। দিনে দিনে দিন পেরিয়ে আজ এমন একটা সময়ে পৌঁছে গিয়েছি সেখানে পুরো পৃথিবীর সব পাওয়াটাকে অন্য কিছুতে খুঁজে বেড়াই। এখন প্রতি ঈদেই  ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেও নিজের জন্য ৩০ টাকার জিনিস কেনার কথা মনেই থাকে না। এটা অভাবের তাড়নায় নয়,মনের ভুলেই হয়ে যায়। অথচ মনের মধ্যে বিন্দুমাত্র অপ্রাপ্তিও কাজ করে না। একেই হয়তো বলে অভিভাবকত্ব। আমার বাবাও হয়ত এতেই পরম প্রাপ্তি অনুভব করেছেন। আজ আমিও বাবা। বিরতিহীন দুষ্টুমিতে পটু আমার মেয়ের জন্য নিরলসভাবে কাটানো প্রতিটি দিন আর নির্ঘুম রাত্রি আমাকে বারবার প্রতিটি বাবা মায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। আমার মা-বাবাও নিশ্চয় আমার জন্য এভাবেই কষ্ট করেছেন,অথবা তার চেয়েও বেশি। আর এজন্যই হয়তো মা-বাবা একটা পর্যায়ে এসে অবলম্বন হিসেবে সন্তানে...