Skip to main content

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রস্থান, গার্ড অব অনার , অতঃপর?


রবীন্দ্র চন্দ্র দেব । একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা,আদর্শ শিক্ষক । দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন,দেশ স্বাধীন করেছেন । দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন সারা জীবন । সেই কল্যাণ মূলক কাজেরই অংশবিশেষ র‍্যাংলার কিরণ দে মডেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় ও উন্নয়নে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা । সহযোগীদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের দুইজন সচিবও রয়েছেন । কিরণ দের ভিটায় নতুন ভবন নির্মানের কাজ শুরু হলেও একাত্তরের ঘাতকচক্রের উত্তরসুরী ভূমিদস্যুরা এই কলেজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে প্রায় ৪ মাস ধরে । ছাত্র শিক্ষক নিয়ে ২৪ নভেম্বর নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করতে গিয়ে চরমভাবে অপমানিত হয়ে নিজ এলাকা,নিজ বাসভূমি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্র চন্দ্র দেব । যাবার সময় বলে গিয়েছিলেন জীবন থাকতে তিনি রসুলপুর আসবেন না । তিনি কথা রেখেছেন । ২৭ ডিসেম্বর তিনি রসুলপুর গিয়েছিলেন । তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে। অশ্রুসিক্ত নয়নে চির বিদায় জানিয়েছেন সবাই। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও দেয়া হয় গার্ড অব অনার। কিন্তু এতে কি তার আত্মা শান্তি পেয়েছে?বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশংসা করতে করতে অনেকের মুখে ফেনা চলে আসতে দেখা যায়। আবার দেশপ্রেমের কথা শুনলে মনে হয় বর্তমানে দেশপ্রেমিকের অভাব নেই। তাই যদি হয় তাহলে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে যে মানুষটা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন তার অপমানে একটা মানুষও প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন না। তাহলে কি সবই ফাঁকা বুলি? একটা পরিবারের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধা অপমানিত হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকারের সচিব মহোদয় ব্যার্থ হচ্ছেন,একটি কলেজের কাজ বন্ধ হয়ে আছে । এ লজ্জা আসলে কার? আর একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে শুধু গার্ড অব অনার প্রদান করেই রাষ্ট্র তার দায়িত্ব শেষ করতে পারেনা । যতদিন অপমানের বিচার না হবে,যতদিন র‍্যাংলার কিরণ দে কলেজ আপনভূমিতে আপন সৌন্দর্য ফিরে না পাবে ততদিন রবীন্দ্র চন্দ্র দেবের আত্মা শান্তি পাবেনা। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনা অপরাধে অপমান করার মতো ধৃষ্টতা যারা দেখায় ,বিনা অবকাশে  তাদের  উপযুক্ত শাস্তি হওয়াটা উচিত নয় কি?  অনতিবিলম্বে এই অপমানের বিচার হবে,সকল জটিলতার অবসান ঘটিয়ে র‍্যাংলার কিরণ দে কলেজটির ভবন নির্মানে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বোচ্চ  সহযোগিতা থাকবে এটাই সকলের কাম্য।

Comments